ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিং কী এবং এর সুবিধা ও অসুবিধা

আজকের এই ডিজিটাল যুগে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। যেকোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির প্রতিটি কাজকে আরও গতিশীল করতে সহজ ও কার্যকর পদ্ধতি গ্রহণ করা হচ্ছে। ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিং বা ভার্চুয়াল চুক্তিপত্র সাইনিং এমনই একটি প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির ব্যবহার প্রতিষ্ঠানিক বিভিন্ন চুক্তিপত্র স্বাক্ষরের কাজকে আরও গতিশীল করে তোলে। ডিজিটাল চুক্তিপত্র স্বাক্ষরের মাধ্যমে শারীরিক উপস্থিতি ছাড়াই কর্মীদের নিয়োগ এবং বিভিন্ন ব্যবসায়িক চুক্তি সম্পন্ন করা যায়।

এই ব্লগে আমরা জানবো, ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিং কী? আরও জানবো, ভার্চুয়াল চুক্তিপত্র সাইনিং এর সুবিধা ও অসুবিধা।

ব্লগে যা থাকছে-

ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিং কী?

ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিং হলো, ডিজিটালি বিভিন্ন ব্যবসায়িক এবং প্রাতিষ্ঠানিক চুক্তিপত্রে সাইন বা স্বাক্ষর করার প্রক্রিয়া। এতে শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে কাগুজে চুক্তিপত্রের পরিবর্তে একটি ভার্চুয়াল ডকুমেন্টে সাইন করা হয়। পরে এই চুক্তিপত্রটি স্বাক্ষর সহ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরাসরি স্বাক্ষরকারীর কাছে পৌঁছানো যায়। 

এবার একটু সহজভাবে ভেবে দেখুন, একজন দক্ষ ও যোগ্য কর্মী হিসেবে বাংলাদেশে বসে পৃথিবীর যেকোন প্রতিষ্ঠানে আপনি নিয়োগ পেতে পারেন এবং কাজ করতে পারেন। একইভাবে পৃথিবীর যেকোন প্রতিষ্ঠানের সাথে অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক বিভিন্ন চুক্তিও হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে কী প্রয়োজন? প্রয়োজন শুধু দুই বা ততোধিক পক্ষের মধ্যকার চুক্তি। আর এই চুক্তিপত্র ভার্চুয়াল চুক্তিপত্র সাইনিংয়ের মাধ্যমে সহজেই সম্পন্ন করা সম্ভব। এটাকেই ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিং বলা হচ্ছে।

হাজিরা অ্যাপ ‘ডিজিটাল চুক্তিপত্র’ ফিচারের মাধ্যমে এই সুবিধাটি প্রদান করে। যেখানে ব্যবহারকারীরা যেকোনো জায়গায় বসে সহজেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করতে পারেন।

ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিংয়ের সুবিধা

১. প্রতিষ্ঠানের চুক্তিপত্র স্বাক্ষরকে নির্ভুল এবং গতিশীল করে তোলে

ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিং বা  ভার্চুয়াল কন্ট্রাক্ট সাইনিং এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এটি আপনার সময় বাঁচায়। প্রচলিত কাগজপত্র ভিত্তিক চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য খসড়া তৈরি, প্রিন্ট করা, সই/স্বাক্ষর করা এবং সকলের কাছে চুক্তির কপি পাঠানোর প্রক্রিয়াটি অনেক সময় নেয়। 

হাজিরা’র ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিং ফিচারের মাধ্যমে যেকোনো চুক্তিপত্রে মুহূর্তের মধ্যেই ডিজিটাল সাইন করা যায়। ফলে আপনার প্রতিষ্ঠানের কাজের গতি বেড়ে যায়। এটি বিশেষভাবে সহায়ক যখন, কোম্পানির একাধিক শাখা থাকে এবং রিমোট কর্মী থাকে। পুরো প্রক্রিয়াটি নির্ভুলভাবে সম্পন্ন হয়, কারণ এখানে ম্যানুয়াল বা কাগজপত্রে লিখার ফলে যে ভুলের সম্ভবনা থাকে সেটা থাকে না।

২. প্রতিষ্ঠানের অপারেশনাল খরচ কমায়

কর্মী নিয়োগ কিংবা ব্যবসায়িক চুক্তি করতে শারীরিক উপস্থিতি, কাগজের চুক্তিপত্র তৈরি, প্রিন্ট, ম্যানুয়ালি সাইনিং এবং শেষে ডকুমেন্টগুলো সকলের কাছে পাঠাতে বেশ খরচ হয়। একই কাজটি ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিংয়ের মাধ্যমে করলে খরচ অনেকাংশে সাশ্রয় হয়।

এছাড়া কাগজের চুক্তিপত্রগুলো নিরাপদ জায়গায় সংরক্ষণ করতে হয়। সেটাও কিন্তু ঝামেলার ব্যাপার। হাজিরা’র ডকুমেন্ট ভল্টে সমস্ত চুক্তিপত্রগুলো ডিজিটাল ফরম্যাটে সংরক্ষণ করা যায়। ফলে কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র হারানোর ঝুঁকি কমে যায়।

৩. চুক্তিপত্রের নিরাপত্তা প্রদান করে

ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিংয়ের ক্ষেত্রে এনক্রিপশন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়, যা আপনার ডকুমেন্টের সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাজিরা’তেও ইলেকট্রনিক চুক্তির নিরাপত্তাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়। ফলে ডকুমেন্ট ভল্টে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রবেশ এবং ফাইলের গোপনীয়তা নষ্ট হওয়া থেকে নিরাপদ রাখে।

৪. রিমোট কর্মীদের সাথে চুক্তি এবং কাজের জন্য সুবিধাজনক 

পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে চুক্তিপত্র দেখার এবং স্বাক্ষর করার সুযোগ থাকায় ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিং রিমোট কর্মীদের জন্য বেশি জরুরি। হাজিরা’র ইলেকট্রনিক সাইনিং ফিচারটি কর্মী এবং নিয়োগকর্তাদের শারীরিক উপস্থিতি ছাড়াই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করার সুযোগ দেয়।

৫. ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিং পরিবেশ বান্ধব 

ইলেকট্রনিক চুক্তিপত্র সাইনিং প্রক্রিয়াটি পরিবেশের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না। কারণ এই পুরো প্রক্রিয়াটিতে কাগজ ও কালির ব্যবহার প্রায় শূন্যে নেমে আসে!

৬. ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিং আইনগতভাবে বৈধ

বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক স্বাক্ষরকে ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন- ২০০৬’ এর অধীনে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এর মানে হলো, ব্যবসায়ীরা এই প্রযুক্তিকে বৈধভাবে বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরের কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। হাজিরা’র ডিজিটাল চুক্তিপত্র ফিচারটির মাধ্যমে ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিং করতে পারবেন। 

ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিংয়ের কিছু অসুবিধা

ইলেকট্রনিক সাইনিংয়ের মাধ্যমে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরের অনেক সুবিধা দেখলাম। তবে কিছু অসুবিধাও রয়েছে, যা আপনার প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসার নিরাপত্তার জন্য বিবেচনা করা উচিৎ।

১. প্রযুক্তিগত জটিলতার কারণে বিঘ্ন ঘটতে পারে

কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান এবং কর্মীরা বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রযুক্তিগত সমস্যার সম্মুখীন হতেই পারেন। যেমন- ইন্টারনেট সংযোগ এবং সফটওয়্যার বা হার্ডওয়্যার সমস্যার কারণে ইলেকট্রকিন কন্ট্রাক্ট সাইনিং প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে।

২. আইনি সমস্যা কিছুটা রয়েই গেছে

যদিও বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক স্বাক্ষরকে ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন- ২০০৬’ এর অধীনে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তবু সকল দেশ বা প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রনিক সাইনিংকে আইনিভাবে বৈধতা দেয় না। বাংলাদেশেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি এখনও আইনগতভাবে বৈধতা পায়নি কিংবা পেশাগত গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।

৩. সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা ঝুঁকি থাকবেই 

প্রযুক্তি যতই এগিয়ে যাক, ডিজিটাল কোনকিছুই সাইবার হামলার ঝুঁকি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত নয়! সঠিক ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকলে ঝুঁকি বাড়বে। এজন্য হাজিরা’র ডকুমেন্ট ভল্ট ব্যবহার করতে পারেন।

৪. সাধারণ কর্মীদের মাঝে ডিজিটাল শিক্ষার অভাব

সব কর্মচারী, নিয়োগকর্তা বা মালিক ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। এটাই বাস্তবতা! এখনো কারো জন্য, কাগজ ভিত্তিক চুক্তি থেকে ইলেকট্রনিক কন্ট্রাক্ট সাইনিংয়ে যাওয়া একটি চ্যালেঞ্জ! তাই হাজিরা’র মতো সহজ এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে।

৫. অনেকে এখনও পূর্ণ আস্থা রাখতে পারেন না!

কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এখনও প্রচলিত চুক্তিপত্র স্বাক্ষর পদ্ধতিকে বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন। ফলে তাদের সাথে ডিজিটাল কন্ট্রাক্ট সাইনিং এর মাধ্যমে কোন কাজ করা সম্ভব হয় না। যদিও দৃশ্যপট দ্রুতই পরিবর্তন হচ্ছে!

আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য সহজ ও সাশ্রয়ী সমাধান- হাজিরা

হাজিরা দেশের সবচেয়ে সাশ্রয়ী এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট অ্যাপগুলোর একটি। একটি অ্যাপ থেকেই আপনি পেতে পারেন কর্মী ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন সাপোর্ট। যেমন-

  • দৈনিক হাজিরা
  • কর্মী তথ্যভাণ্ডার
  • কাজের শিফট প্লানিং
  • রিপোর্ট
  • পে-রোল ম্যানেজমেন্ট
  • ডিজিটাল চুক্তিপত্র
  • ডকুমেন্ট ভল্ট
  • কাস্টম সেটিংস
  • ফ্রি কাস্টমার সাপোর্ট

কেনো সাশ্রয়ী অ্যাপ বলছি সেটাও দেখে নেয়া যাক-  হাজিরা’র চারটি প্যাকেজ ও তাদের মূল্য

০১. বেসিক প্যাকেজ- 

কোম্পানির সাইজ-  ০ থেকে ২০ জন

  • ৳১,৫০০/ মাসিক
  • ৳১৫,০০০/ বাৎসরিক

০২. স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজ- 

কোম্পানির সাইজ-  ২১ থেকে ৫০ জন

  • ৳৩,০০০/ মাসিক
  • ৳৩০,০০০/ বাৎসরিক

০৩. প্রিমিয়াম প্যাকেজ-  

কোম্পানির সাইজ-  ৫০ থেকে ৯৯ জন

  • ৳৪,৫০০/ মাসিক
  • ৳৪৫,০০০/ বাৎসরিক

০৪. এন্টারপ্রাইজ প্যাকেজ- 

কোম্পানির সাইজ-  ১০০+ জন

  • আলোচনা সাপেক্ষে
  • যোগাযোগ করুন- 
  • ফোন: 01967391554
  • ইমেইল: info@hazira.com

সহজ তিনটি ধাপে হাজিরা’তে যাত্রা শুরু করুন!

১ম ধাপ- হাজিরা’তে রেজিস্ট্রেশন বা সাইন আপ করুন: 

প্রথমেই কোম্পানির মালিক হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করে হাজিরা’য় আপনার জার্নি শুরু করুন। রেজিস্ট্রেশনের পরেই আপনার ইনবক্সে একটি ভেরিফিকেশন মেইল যাবে, এটি দিয়ে আপনার ই-মেইলটি ভেরিফাই করতে হবে। 

(ভেরিফিকেশন মেইলটি আপনার ইনবক্সে না পাওয়া গেলে অনুগ্রহ করে স্প্যাম ফোল্ডারে চেক করুন।)

২য় ধাপ- আপনার কোম্পানি সেট-আপ করুন: 

ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হলে লগইন করুন। এবার আপনার কোম্পানি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে হাজিরা’য় আপনার কোম্পানি সেট-আপ করুন।

৩য় ধাপ- হাজিরা’র বিভিন্ন ফিচার উপভোগ করুন: 

এরপর আপনি হাজিরা’র ড্যাশবোর্ডটি দেখতে পাবেন। হাজিরা’র বিভিন্ন ফিচার উপভোগ করুন সহজে এবং সাশ্রয়ী দামে! হাজিরা’র ওয়েব এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, দুটোই আছে। 

ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন: আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করতে হবে।
হাজিরা ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন

মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন: হাজিরা’র মোবাইল অ্যাপ আপনার প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন কাজগুলো পরিচালনা করা আরও সহজ করবে। এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট আরও সহজ করতে ডাউনলোড করুন হাজিরা’র মোবাইল অ্যাপ- 

অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ

আইওএস অ্যাপ 

হাজিরা অ্যাপের সকল কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ডেমো ভিডিও দেখুন-
Demo of Hazira- Employee Management Application

৩০ দিনের ফ্রি ট্রায়াল!

হাজিরা’য় আপনি চাইলেই প্রথম ৩০ দিন ফ্রি ট্রায়াল শুরু করতে পারেন। তারপর প্রয়োজন মতো আপনার ব্যবসার জন্য প্যাকেজ নিয়ে ব্যবসায় সফলতা অর্জন করুন। তাহলে আর দেরি না করে চলে আসুন হাজিরা’য়!